মোঃ মুজাহিদ সাতক্ষীরা: সরকারি নিয়ম অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও নিয়ম ভঙ্গ করতে দেখা গেছে সাতক্ষীরা তালা উপজেলার এক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। কলাগাছি সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায় জাতীয় পতাকা না টানানোর ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। গত মঙ্গলবার ( ১২ জুন ) দুপুর পৌনে একটায় সরজমিনে তালা উপজেলার কলাগাছি সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। বিদ্যালয়ে কাগজেকলমে ১২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা থাকলেও প্রধান শিক্ষক ছুটিতে রয়েছেন। ওপর একজন ঐ স্কুলের দপ্তরি নকুল কুমার সরকার স্কুলে উপস্থিত হয়ে অসুস্থতার কারণে মৌখিক ছুটি নিয়ে চলে যাওয়ায় স্কুলে উপস্থিত ছিলেন ১০ জন শিক্ষক কর্মচারী । শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে না পড়ার মতোই।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, “৩০ লাখ শহীদ ও ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা পেয়েছি। আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। আজ স্বাধীন দেশে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান চলাকালীন সময়ে স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকা না টানানোর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমনটা মেনে নেওয়া যায় না। স্কুল চলাকালে জাতীয় পতাকা উড়ছে না এটা কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ অবহেলা বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।”
স্থানীয় যুবসমাজ বলছেন , “ স্কুল চলাকালীন সময়ে জাতীয় পতাকা ব্যবহার না করার অর্থ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। স্বাধীন বাংলাদেশকে অস্বীকার করা। শিক্ষকরা যদি জাতীয় পতাকার ব্যাবহার না করেন, তাহলে তাদের কাছ থেকে আমরা নতুন প্রজন্ম কী শিখব? ওই বিদ্যালয়ে যারা পাঠদান চলাকালীন সময়ে পতাকা উত্তোলন করেনি তারা কোন ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা তদন্ত করে বের করা উচিত।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের সহঃ প্রধান শিক্ষিকা বলেন ,পতাকা টানানোর বিষয়ে দপ্তরির অনুপস্থিতিতে নাইট গার্ড না জেনেই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পতাকা নামিয়ে ফেলেছে। তাঁর কাছ থেকে মৌখিক ভাবে ছুটি নিয়ে অনুপস্থিত থাকা শিক্ষকের নাম জানতে চাইলে বলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে আলাপ করেন ও সভাপতি বিষয় টা ভালো বলতে পারবেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহমেদ এ প্রতিবেদক কে বলেন, স্কুল খোলা তারিখে অবশ্যই সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত পতাকা টানিয়ে রাখতে হবে। যদি ওই স্কুলে পতাকা না টানিয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে বলেন একজন শিক্ষক মেডিকেল ছুটিতে আছেন। আর একজন শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত হবার পর অসুস্থ হওয়ায় তাকে মৌখিক ছুটি দিয়েছেন। বিশেষ মূহুর্তে সেটা তিনি দিতে পারেন।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া শারমিন বলেন , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন জাতীয় পতাকা টানাতে হবে। পতাকা না টানালে সেটা রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের শামিল। ওই স্কুলে পতাকা না টানিয়ে থাকলে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হবে। ও তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইলে একাধিক বার ফোন দিলে রিসিভ হয়নি।
Leave a Reply