মো. মিজানুর রহমান, তালা: পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে সারা দেশের ন্যায় কাপছে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের অন্যান্য জেলার ন্যায় সাতক্ষীরার তালা সহ আশে পাশের এলাকায় কনকনে হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে সব শ্রেনির মানুষ। পৌষের শীতের সাথে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহে শীতের তীব্রতা অধিক বেড়েছে। গত কয়েক দিন থেকে স‚র্যের দেখা ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছেনা। দিনের অধিকাংশ সময় ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কৃষি কাজ থেকে শুরু করে অফিস পাড়া এমনকি ব্যবসা-বানিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। তীব্র শীতে দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা রয়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে। হাসপাতাগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে বেড না পেয়ে বারান্দায় ও মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। তীব্র শীতে নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা ও আমের মুকুল। ফলে এবারের বোরো ও আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।গত কয়েকদিনের মতো শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তালায় সূর্যের মুখ দেখা গেলেও তাতে শীতের তীব্রতা কমেনি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে শীতের নিষ্ঠুর কামড়ে অসহায় ছিন্নমূল মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম ভোগান্তি।
হটাৎ জেঁকে বসা এই শীত থেকে রক্ষা পাবার জন্য তালা সহ জেলার মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম পোষাকের কদর বেড়েছে। কিন্তু বিগত কয়েকমাস ধরে দ্রব্যমূল্য ব্যপক বৃদ্ধির সাথে শীতের পোষাকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুনের বেশি। যেকারনে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। তারমধ্যে তীব্র শীত থেকে রক্ষ পেতে গরম পোশাক কেনার ক্রয় ক্ষমতা দরিদ্র মানুষরা হারিয়ে ফেলেছে। যেকারনে তীব্র শীতে যবুথুবু অবস্থায় সময় পার করছে অসহায় মানুষ। শীত এবং শৈত্য প্রবাহে ব্যপক ভোগান্তির মধ্যে বানভাসী ও নদী সংলগ্ন এলাকার ছিন্নমূল মানুষ। শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর সহ আশপাশের জেলার মানুষ। অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের শীত নিবারনের জন্য সরকারি বা বেসরকারি সাহায্য-সহযোগীতা তেমন চোখে পড়ছেনা। কিছু স্থানে যা দেয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই নগন্য। সকাল ও রাতে অনেক স্থানে যুবক ও বয়স্কদের খুড়কুটো জ¦ালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা চালাতে দেখা যাচ্ছে।এদিকে, প্রায় ২৪ লাখ জনঅধ্যুষিত খুলনা জেলায় দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ মানুষ। এহিসাবে জেলায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ অতিদরিদ্র শীতার্ত মানুষের জন্য মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মত চেপে বসেছে তীব্র শীত। তীব্র শীতের এঅবস্থায় সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনও সুসংবাদ দিতে পারে নি। আবহাওয়া অফিস বলছে, শীতের তীব্রতা সহসা কমছে না, শৈত্য প্রবাহ এখনও ২/৩দিন থাকবে। আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাজেদুল হক জানান, পরপর ২দিন বৃহত্তর যশোর অঞ্চল দেশের মধ্যে সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা চলছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। বাতাসের গতিবেগ উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘণ্টায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। রাতে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানান তিনি। এবিষয়ে খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে যশোরে ৮ ডিগ্রী, চুয়াডাঙ্গায় ৭ ডিগ্রী আর খুলনায় ১১.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
Leave a Reply