আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ ডেস্ক: মসলার দাম বেড়েছে সাতক্ষীরায়। ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পণ্যটির দাম। পাশাপাশি জেলার পাইকারি মসলা বাজারে এলাচ, লবঙ্গ ও দারুচিনির দামও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিনিময় হার বাড়ার পাশাপাশি অপ্রতুল আমদানির কারণে মসলার দাম বেড়েছে। সাতক্ষীরা জেলা সদরের সুলতানপুর বড় বাজারের কয়েকটি মসলার দোকান ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
সুলতানপুর বড় বাজারের খুচরা মসলা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমিনিয়া স্টোরে মার্কিন ছোট এলাচ বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ভারতীয় ছোট এলাচ ২ হাজার ৪০০ টাকা, লবঙ্গ প্রতি কেজি ১ হাজার ৮০০ টাকা এবং দারুচিনি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি। যদিও দুই সপ্তাহ আগেও একই প্রতিষ্ঠানে মার্কিন ছোট এলাচ বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ২০০ টাকা, ভারতীয় ছোট এলাচ ২ হাজার ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২০০ টাকা ও দারুচিনি বিক্রি হয়েছে ৩৩০ টাকা কেজি দরে।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী ফখরুল হোসেন দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, পাইকারিতে দাম বাড়ার পাশাপাশি সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় মসলার দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো জাতের এলাচ ও লবঙ্গ মূলত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হয়। এছাড়া প্রতিবেশী ভারত থেকেও পণ্যটি আমদানি হয়। তবে সম্প্রতি সব ধরনের মসলার দাম কিছুটা বেড়েছে।’ পাইকারি মসলা আড়ত মেসার্স আব্দুর রউফ স্টোরে ভালো জাতের ছোট এলাচ কেজিপ্রতি পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার টাকা দরে। পাশাপাশি লবঙ্গ ১ হাজার ৭০০ ও দারুচিনি বিক্রি হয়েছে ৩৮০ টাকা কেজি। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আব্দুর রউফ জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানীকৃত মসলার দাম বেড়েছে। ভোমরা বন্দরের মসলাজাত পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবু হাসান সন বলেন, ‘এ বন্দরে কোনো মসলা আমদানির অনুমোদন নেই। দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়েই মূলত ভারত থেকে মসলা আমদানি হয়ে থাকে। ফলে সাতক্ষীরায় পণ্যটির দাম একটু চড়া থাকে। জিরার পাশাপাশি ভোমরা বন্দর দিয়ে মসলা আমদানি করতে পারলে সরকারের যেমন রাজস্ব আদায় বাড়বে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবে। এতে সাতক্ষীরায় দামও কমে আসবে।’
জেলা শহরের রসুলপুর মেহেদীবাগ এলাকার বাসিন্দা মোঃ মামুন হোসেন বলেন, ‘সব ধরনের মসলার দাম অস্বাভাবিক। মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের পক্ষে রান্নাতে মসলা ব্যবহার মুশকিল হয়ে পড়েছে। একটি পরিবারের জন্য ন্যূনতম ৫০০ টাকার কমে মসলা কেনার সুযোগ নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যারা সাপ্তাহিক বাজারে যাই, তাদের মাসে অন্তত ১ থেকে ২ হাজার টাকার মসলা কিনতে ব্যয় হয়। এছাড়া অন্য মসলাজাত পণ্যও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে।’
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আবু সাঈদ মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ সন দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, ‘দেশের চাহিদা অনুযায়ী শতভাগ মসলা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের বিনিময় হার বাড়ার কারণে এসব উচ্চ মূল্যের মসলার দাম সম্প্রতি কিছুটা বেড়েছে। তবে কোনো ব্যবসায়ী যাতে অতিরিক্ত মুনাফা না করে, সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং করা হয়।
Leave a Reply