তুহিন হোসেন: সাতক্ষীরা জেলার সকল উপজেলার বোরো চাষে বাড়তি খরচে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। সেচ নির্ভর বোরো চাষ মৌসুমে ডিজেল ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষিনির্ভর ফসল উৎপাদনের সর্বক্ষেত্রে। এতে বোরো চাষে গুণতে হবে বাড়তি খরচ। যে কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে এবং এর বিরূপ প্রভাব পড়বে ভোক্তা পর্যায়ে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে জ্বালানি তেল ডিজেলের দাম বৃদ্ধিসহ চলতি বছরে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে বোরো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে কৃষকের। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো অবাধ এবং উৎপাদনে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এ নিয়ে চরমভাবে বিপাকে পড়বেন সাতক্ষীরা জেলার প্রান্তিক বোরো চাষিরা।
এদিকে বোরো চাষের বড় অংশই খরচ জোগান দিতে হয় সেচখাতে। সেচখাতের বাড়তি খরচের দুশ্চিন্তার মধ্যেই সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কৃষকরা জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন নিজ নিজ জমিতে।
সদর উপজেলার আগরদাড়ির কৃষক মোমিন বলেন, বোরো চাষের উপযোগী করতে জমি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু দুশ্চিন্তার করণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাড়তি সেচ খরচ যোগান দেওয়া নিয়ে। তারা বলেন, বিদ্যুৎ ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে এ বছর বোরো আবাদে সেচ খরচ বাড়লেও বাড়বে না উৎপাদন। কারণ পূর্বের সেচ খরচে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে, এ বছর সেচ মূল্য বৃদ্ধির কারণেও একই পরিমাণ ধান উৎপাদন হবে। এরপরও সদর উপজেলার সকল এলাকারই কৃষক ঝুঁকে পড়েছেন বোরো আবাদের দিকে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ২নং কুশখালী ইউনিয়নের ভাদড়া গ্রামের ফরিদ বলেন, গত বছর এক একর জমিতে বোরো চাষে সার, কীটনাশক ওষুধ, সেচ, বপন ও রোপনসহ মোট খরচ পড়েছে সাড়ে ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু চলতি মৌসুমে একই জমিতে বোরো আবাদে খরচ পড়বে সাড়ে ১৫ হাজার থেকে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে বর্গা চাষিদের চরম বিপাকে পড়তে হবে এবং আশানুরূপ লাভ থেকে বঞ্চিত হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, ডিজেল ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে বোরো আবাদে তেমন কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না। আমন চাষ মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, এতে কৃষকরা আশানুরূপ লাভবান হয়েছেন। বর্তমানে রবিশস্যেরও চাষাবাদের ভালো উৎপাদন হওয়ায় কৃষকরা সেখান থেকেও লাভবান হয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না আসাসহ পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না হলে বোরো ধানেরও বাম্পার ফলন হবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের বোরো চাষে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন।
Leave a Reply