কলারোয়ার কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক নিয়োগে মহাজালিয়াতি!
নিজস্ব প্রতিনিধি: সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার অজিত কুমার সরকারের বিরুদ্ধে অবৈধ অর্থের বিনিময় একতরফা তদন্তপূর্বক বে-আইনীভাবে এনটিআরসিএ বিহীন, নিয়োগ বিহীন শিক্ষক কর্মচারীর তালিকা এমপিও পাওয়ার জন্য সুপারিশ করার অভিযোগ উঠেছে। অজিত কুমার সরকারের দেওয়া প্রতিবেদন বাতিল ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রস্তুতি চলছে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলার। কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক নিয়োগে মহা-জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন জুনিয়র হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জমিদাতা মো. আতিয়ার রহমান এ অভিযোগ করে বলেন, আমি ২০০৩ সাল থেকে সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতার দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার দানকৃত রেজিস্ট্রি ৫০শতক জমির উপর স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত। কথিত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হান্নান লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পূর্বে পাশ করা ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে আমার স্বাক্ষর জাল, মৃত ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল, তদানিন্তন জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল, মৃত শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করেছেন। তালা শহীদ আলী আহম্মেদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম.এ কাশেমের স্বাক্ষর জাল করে মো. আব্দুল হান্নান তার আপন ভাই মো. আবুল হাসান, মীর বাহার আলী, নিরাপদ গাইন, মো. মশিয়ার রহমান, মো. দবীর উদ্দীন, তপতী মন্ডল, সাহেব আলী, জেসমিন নাহার এই সকল ব্যক্তিদেরকে এমপিওভুক্ত করার জন্য বড় অংকের টাকার বিনিময়ে উপরোক্ত জেলা শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে তার প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভীত্তিহীন। এই সকল ব্যক্তিরা কোনদিন স্কুলে শিক্ষকতা করেননি। তাদের শিক্ষকতা করারও অবকাশ নেই। যেহেতু আমি সভাপতি থাকাকালীন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগবোর্ড, নিয়োগ যোগদানের রেজুলেশান কোন মিটিং তাদের ব্যপারে সভাপতিত্ব করিনি বা কোন মিটিং হয়নি বা তারা কোন বৈধ শিক্ষক কর্মচারি নয় বা এমপিও পূর্ব তারা কোনদিন স্কুলে আসেননি। যারা ২২ বছর শ্রম দিয়েছে (বিনা বেতনে) তাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্যদেরকে এমপিওভুক্ত করার জন্য এক প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেছেন যা বাতিল যোগ্য। এব্যপারে পুনরায় তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য দাবি জানান আতিয়ার রহমান।
তিনি আরও জানান, ৬জন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারীকে বাদ দিয়ে কথিত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হান্নান বর্তমানে ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্যে নেমেছেন। বাদ পড়া শিক্ষক-কর্মচারীরা হলেন-সহকারী শিক্ষক বদরুজ্জামান, নাসিমা পারভীন, সবুর আহমেদ, জাকির হোসেন, ওহাব আলী, শাহিদা খাতুন ও কর্মচারী শাহিদুর রহমান, মীর মোস্তাফিজুর রহমান। সরকারী বিধি মোতাবেক ২০০৩ সালে এদের নিয়োগ হয়। তালা শহিদ আলী আহমেদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএ কাশেম ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন।
এদিকে কথিত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হান্নান ও দুর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার অজিত কুমার সরকার যে প্রতিবেদন ও সুপারিশ করেছেন সেখানে মাউশির মহা-পরিচালকের প্রতিনিধি দেখানো হয়েছে শহিদ আলী আহমেদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মায়া রানী দেবনাথ (বর্তমানে মৃত) ও তালা বি দে সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হানেপ আলীকে (বর্তমানে মৃত)। অথচ এ দু’জন কখনো প্রধান শিক্ষক ছিলেন না এবং নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন না। এছাড়া তৎকালীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহিনুর আলমের স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে। তিনিও অনেক আগে মারা গেছেন। এসংক্রান্ত পত্রিকায় কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন নেই। তারা যে পত্রিকার কথা বলছে সেসব পত্রিকায় বর্ণিত তারিখে কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি। ওই তারিখের পত্রিকা সংগ্রহ করে পত্রিকার শীর্ষ ভাগ কেটে কম্পিউটার কম্পোজ করা বিজ্ঞপ্তি লিখে বিশেষ কায়দায় আঠা লাগিয়ে ফটোকপি করে জালিয়াতি করা হয়েছে। যা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন আতিয়ার রহমান। তিনি এ ব্যাপারে মাউশির খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক, মহা-পরিচালক, দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply