ডুমুরিয়া প্রতিনিধি: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নবাসীর ইউনিয়ন পরিষদের সেবা পেতে ভোগান্তির অন্ত নেই। জন্মনিবন্ধন সনদ, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেবা পেতে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়ে এই ইউনিয়নের মানুষ। শুধু তাই নয়, সুপেয় পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দকৃত গভীর নলকূপ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
খুলনা জেলা সদরের কোলঘেষা ইউনিয়ন গুটুদিয়ন খান মুজিবুর রহমান ১৯৭৩সালে প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে যার আয়তন ৫৭ বর্গকিলোমিটার। এই ইউনিয়নের অধিবাসী ২৬হাজার ৬৫৪জন। ভোটার সংখ্যা ১৮হাজার ১৩২জন। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজারসহ রয়েছে বিপুল পরিমাণ আবাসন প্রকল্প। রয়েছে মাঝারী ও ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান। এখানকার অধিবাসীদের জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারেশ কায়েম সনদসহ বিভিন্ন সেবা পেতে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে গত তিনবছর ধরে।
বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এই ভোগান্তি বেড়েছে চরম আকারে। তিনি গত কযেকবছর কাউকে পাত্তা দেননি। এদিকে সম্প্রতি এই ইউনিয়নে সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বেশ কয়েকটি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেয়। সেই বরাদ্দ ব্যাপক নয়-ছয় ও অর্থগ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মঞ্জু রানী রায়ের নামে সাবেক এমপি একটি গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেন।
আর তার স্বামী অনাদী রায়ের নামে আরেকটি নলকূপ বরাদ্দ দেন ইউপি চেয়ারম্যান। সেই গভীর নলকুপটি একই স্থানে মাত্র ২০ ফুট দূরত্বে বসানো হয়েছে। যদিও অনাদী রায়ের নাম পরিবর্তন করে তার বড় ভাই নলিনী মন্ডলের নামে বসানো হয়েছে। এদিকে ওই ইউপি মেম্বর মঞ্জুরানী গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থগ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মঞ্জু রানী দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, যে টাকা নিয়েছি তা চেয়ারম্যানকে দিয়েছি আর আসাবুরের টাকা ফেরত দিয়েছি। এক বাড়িতে দুটি টিউবওয়েল বসানোর বিষয়ে বলেন, একটি সাবেক এমপি দিযেছে আরেকটি চেয়ারম্যান দিয়েছে। আমার স্বামীর নামে বসানো হয়নি ভাসুরের নামে বসিয়েছি। এদিকে এসব বিষয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদে গিযে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে তাকে কয়েকদফা ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ডুমুরিয়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারি প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার পাল দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে জানান, তালিকা অনুযায়ি ৫৯নম্বর ক্রমিকে মঞ্জু রানী রায় ও ৬৪নম্বরে তার স্বামী অনাদী রায়ের নাম রয়েছে। পরবর্তিতে অনাদী রায়ের নাম পরিবর্তন করে তার ভাই নলিনী মন্ডলের নামে এটি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, একই বাড়িতে দুটি গভীর নলকূপ যদি বরাদ্দ দেওয়া হয়, তবে সেটি অনিয়ম। এটি দেখে এর সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, নাগরিক সেবা পেতে জনপ্রতিনিধিদের জনবান্ধব না হলে ভোগান্তি বাড়ে, এটি কোনভাবেই কাম্য নয়।
Leave a Reply