নিজস্ব প্রতিনিধি: দক্ষিণ-পশ্চিমঞ্চলের জলবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৩০০ শত কোটি টাকা ব্যায়ে কপোতাক্ষ নদ খনন করা হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন ও ফসল রক্ষা করার জন্য জলবদ্ধতা থেকে মুক্তির একমাত্র অবলম্বন সেই কপোতাক্ষ নদ উন্নয়নকর্মী নামে পরিচিত শেখ ইয়াকুব আলী ব্যক্তি স্বার্থে হাসিল করে দখল করে নদীর মধ্যে প্রায় ১০০ শত ফুট বাঁশ দিয়ে পাইলিং করে বান দেওয়া ও লোহার রড-সিমেন্ট খোয়া দিয়ে পাকা পিলার তৈরী করে দখল করা হয়েছে। তালার মেলা বাজারের পশ্চিমপাশে কপোতাক্ষ নদ দখল করে নদের মধ্যে বাঁশের বেঁড়া দিয়ে দখল ও পাকা পিলার বসিয়ে স্থায়ী ভাবে নদ দখল করার প্রতিবাদে ও দখলকৃত নদী পুনরদ্ধারের দাবিতে গতকাল বুধবার(১৩ ই নভেম্বর) বিকাল ৪ টায় তালা সদরের ডাকবাংলোর সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নাগরিক ঐক্য পরিষদের আয়োজনে উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ মোঃ আব্দুল লতিফ শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস,খাঁন ফারুক হুসাইন, মোঃ রশিদ গাজী,মোঃ রহমত আলী গোলদার,পার্থ প্রতিম মন্ডল, কাজী জীবন বারী, মোঃ মতিয়ার রহমান সরদার, এস.এম হাসান আলী বাচ্চু, মোঃ নেয়ামত মোড়ল, মোঃ ফয়সাল হোসেন, এস.এম জহর হাসান সাগর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, সে তালা কপোতাক্ষ নদের মেলা বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে কপোতাক্ষ নদীর মধ্যে পানির তলে বাঁশ দিয়ে পাইলিং করে যাহাতে পলি জমা হয়। পলি জমা অংশে প্রতি বছর মাটি ভরাট করে এবং ১০-২০ ফুট চওড়া করে বাঁধ দেয়। কামরুল বিশ্বাসের চায়ের দোকান সামনে হইতে মাঝিয়াড়া মহা-শশ্বান পর্যন্ত প্রায় কোয়াটার কিলোমিটার দুরত্বের নদী বাঁধ দিয়ে জমি শ্রেনী করেছে। প্রতি বছর ১০-২০ ফুট করে প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে এভাবে নদী দখল করে প্রায ৪০০ ফুট নদী ভরাট করে জমি বানিয়েছে। নদীর মধ্যে বাঁশের বেড়া দিয়ে লাউ গাছ উচ্ছে গাছ বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে দখল করে পরে মাটি দিয়ে নদীর ভিতর দিয়ে বৈড়িবাঁধ দিতে দিতে নদীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এভাবে দখল প্রক্রিয়া অব্যহত রয়েছে। তিন চার মাস আগে খোয়া, সিমেন্ট,লোহার রড দিয়ে দিয়ে ৭-৮ ফুট অন্তর অন্তর পিলার তৈরী করে নদীর সীমনার মধ্যে প্রায় ২০০ শত ফুটের অধিক পিলার প্রবেশ করেছে। বক্তারা কথিত সমাজ সেবক শেখ ইয়াকুব আলী কর্তৃক কপোতাক্ষ নদী দখলের জায়গা উদ্ধার পাকা পিলার দ্বারা নদী দখলের চেষ্টা থেকে পাকা পিলার অপসারণ, নদীর সীমানা চিহ্নিত করে সিমানা নির্ধারণসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানানো হয়। এবিষয়ে উন্নয়ন কর্মী শেখ ইয়াকুব আলী জানান, আমার কেনা সম্পত্তির উপর পিলার তৈরী করেছি। নদী দখল করিনি।
এ প্রসংঙ্গে তালা সদর ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন এবং সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, কপোতাক্ষ নদীর মধ্যে কক্রিট পিলার তৈরী করে দখল করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কোন ব্যক্তির জমি নদী ভাঙ্গনে নদীতে চলে গেলে তা সরকারী সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়। এবং যদি পরবর্তিতে ভরাট হয়ে জমি শ্রেনী হয় সেটিও সরকারী সম্পত্তি। কোন ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তি দখল করতে পারবে না। দখল করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মোঃ রাসেল বলেন, সরকারী সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় দখল করার সুযোগ নেই। কেউ যদি অস্থায়ী ভাবে কোন স্থাপনা তৈরী করা হয় তাহা আমি অপসারণ করবো। আর যদি স্থায়ী ভাবে স্থাপনা তৈরী করা হয় তাহা বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়ে পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম, বিষয়টি প্রতিবেদকের মাধ্যমে তিনি অবগত হয়েছেন। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা প্রমানিত হলে নদী দখলকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply