1. nokhatronews24@gmail.com : ajkarsatkhiradarpan darpan : ajkarsatkhiradarpan darpan
  2. install@wpdevelop.org : sk ferdous :
হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশবান্ধব শকুন - আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ
রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫ অপরাহ্ন
১৩ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ খবর :
📰প্রথম আলোর বিভ্রান্তিকর রিপোর্টের প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি📰সদরের সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের ঘুসের টাকা গ্রহনকারী মহসিনের ক্ষমতার উৎসাহ কোথায়? (১ম পর্ব)📰স্বামী-সন্তানকে ফেলে পরকীয়ায় রেহেনা এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ📰পাইকগাছায় ইয়াবাসহ যুবক আটক📰পাইকগাছায় বিভিন্ন পূজামন্ডপে বিএনপির সিসি ক্যামেরার প্রদান📰শ্যামনগরের ৭০টি পূজা মন্দিরে বিএনপির উপহার হস্তান্তর📰সাগরে লঘুচাপ, তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত📰সাতক্ষীরায় “বিশ্ব গণমানুষের সেবা ফাউন্ডেশন”এর জেলা কমিটি অনুমোদন📰পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে সাতক্ষীরা জামায়াতের বিক্ষোভ📰কালিগঞ্জে পুকুরে ডুবে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

হারিয়ে যাচ্ছে পরিবেশবান্ধব শকুন

তুহিন হোসেন সাতক্ষীরা
  • হালনাগাদের সময় : বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১২৪ সংবাদটি পড়া হয়েছে

তুহিন হোসেন সাতক্ষীরা থেকে:  বাংলাদেশের এখন অতি বিপন্ন একটি প্রাণীর নাম শকুন। এক সময়ে প্রায় সর্বত্রই দেখা মিলত বৃহদাকার এই পাখিটির। কিন্তু এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। অনেকের ধারণা শকুন অমঙ্গলের প্রতীক। আসলে ধারণাটি একদমই ভুল। পরিবেশবিদেরা বহু আগেই এই পাখিকে প্রকৃতির ‘পরিচ্ছন্নতাকর্মী’ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে শকুন। বাংলাদেশে কয়েক প্রজাতির শকুন দেখা যেত। সেগুলোর মধ্যে রাজ শকুন, সরু ঠোঁট শকুন, হিমালয় বা তিব্বত অঞ্চল থেকে আসা হিমালয়ান গৃধিনী, মঙ্গোলিয়া থেকে উড়ে আসা ইউরেশীয় গৃধিনী ইত্যাদি।
বর্তমানে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে এসেছে এই প্রজাতির। শকুন না থাকায় নদীতে, হাওড়ে ও উপকূলীয় চরে প্রায়ই গৃহপালিত জীবজন্তুর মৃতদেহ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। লোকালয় থেকে মৃতদেহ অপসারণ করা গেলেও জনবিরল প্রান্তর, জলাশয় ও বনে থেকে সম্ভব হয় না।
মৃত প্রাণীর দেহ থেকে ক্ষতিকর জীবাণু প্রকৃতিতে ছড়ানোর আগেই তা খেয়ে সাবাড় করে দেয় শকুন। গরু ও মানুষের জীবনের জন্য অন্যতম ঝুঁকি হচ্ছে অ্যানথ্রাক্স রোগ। একমাত্র শকুন হচ্ছে সেই প্রাণী, যে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত মৃত গরুর মাংস খেয়ে হজম করতে পারে। যক্ষ্মা ও খুরারোগের জীবাণু শকুনের পেটে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রাখলেও তা একশ বছর সংক্রমণক্ষম থাকে। প্রখর দৃষ্টিশক্তির অধিকারী পাখিটি বটগাছ, কড়ইগাছ, শিমুল, বাঁশঝাড়, দেবদারু গাছে বাসা বানায়। এ পাখি একসঙ্গে ১৫ থেকে ২০টি ডিম পাড়ে। তিন সপ্তাহ তা দেয়ার পর বাচ্চা ফোটে। এর স্বাভাবিক আয়ুষ্কাল ২৫ বছর। তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার হয় এ পাখি। দেশে দু’শ’ প্রজাতির পাখি হুমকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শকুনও। ক্রমাগত কমছে শকুনের সংখ্যা।
পরিবেশ-প্রকৃতিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা- আইইউসিএন এই শিকারি প্রজাতির শকুনকে ‘বিশ্ব মহাবিপণ্ণ’ পাখি ঘোষণা করেছে। এক গবেষণাগ্রন্থে জানা গেছে, ‘৩৫ বছর আগেও ভারতবর্ষে ৪ কোটি শকুন ছিল। বর্তমানে এ সংখ্যা ৪০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশে এখন শকুন নেই বললেই চলে। যাও আছে তা ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে। এদের দৃষ্টি এতটাই প্রখর যে, অনেক উঁচু থেকেও এরা মাটি বা পানির ওপরে থাকা লাশ দেখতে পায়। শকুন সাধারণত দল বেধে থাকে। মৃতপ্রায় মানুষ বা প্রাণীর আশেপাশে শকুন দলবদ্ধভাবে উড়তে থাকে। তবে জীবিত কোনো মানুষ বা প্রাণীকে সাধারণত শকুন আক্রমণ করে না।সারা বিশ্বে প্রায় ১৮ প্রজাতির শকুন দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রায় ছয় প্রজাতির শকুন রয়েছে। চার প্রজাতি স্থায়ী আর দুই প্রজাতি পরিযায়ী। এগুলো হলো-রাজ শকুন, গ্রিফন শকুন বা ইউরেশীয় শকুন, হিমালয়ী শকুন, সরুঠোঁট শকুন, কালা শকুন ও ধলা শকুন। সব প্রজাতির শকুনই সারা বিশ্বে বিপন্ন। স্থায়ী প্রজাতির মধ্যে রাজ শকুন অতি বিপন্ন।
তিন দশক আগে বাংলাদেশের আকাশে ১০ লাখ শকুন উড়ত। এরপর কমতে কমতে তা এখন মাত্র ২৬০-এ নেমে এসেছে। মূলত ১৯৯০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যেই ৯৯ শতাংশ শকুন হারিয়ে গেছে দেশ থেকে। শকুনের অবিশ্বাস্য গতিতে হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রথম নজরে আসে ১৯৯২ সালে। গবেষকরা মাঠে নেমে পড়েন। শুরু হয় কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা। দ্রুত বিলুপ্তির রহস্য উন্মোচনে লেগে যায় ১১ বছর। গবাদি পশুর শরীরে তখন ডাইক্লোফেনাক ওষুধ প্রয়োগ করা হতো। মৃত গরুর মাংসই শকুনের প্রধান খাদ্য। তাই এ ধরনের পশু মারা গেলে সেটিই হয়ে উঠত শকুনের বংশ নির্মূলের প্রধান নিয়ামক। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক ড. লিন্ডসে প্রমাণ করেন, ডাইক্লোফেনাক প্রয়োগ করা গরুর মাংস খাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে শকুনের মৃত্যু হয়। এমনকি এ তথ্য জানার পরও বাংলাদেশে ওষুধটি নিষিদ্ধ করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। ২০১০ সালে দেশব্যাপী শকুনের জন্য ক্ষতিকারক ওষুধ ডাইক্লোফেনাক নিষিদ্ধ করা হয়। দেশব্যাপী শকুনের খাদ্য প্রাণীর চিকিৎসায় কিটোটিফেনও নিষিদ্ধকরণ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে। শকুন বিলুপ্তির পেছনে রাসায়নিকই একমাত্র কারণ নয়। কীটনাশক ও সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পানির দূষণ, খাদ্য সংকট, কবিরাজি ওষুধ তৈরিতে শকুনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যবহার, ইউরিক অ্যাসিডের প্রভাবে বিভিন্ন রোগ ও বাসস্থানের অভাবকেও দায়ী করছে আইইউসিএন। শকুন রক্ষায় দু’টি ওষুধ নিষিদ্ধ করা ছাড়াও সরকার ২০১৩ সালে জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি গঠন করে। ২০১৪ সালে দেশের দু’টি অঞ্চলকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করা হয়। প্রথমটি সিলেট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু অংশ এবং দ্বিতীয়টি খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের কিছু অংশ। এছাড়া আইইউসিএনের সাথে সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ২০১৫ সালে শকুনের প্রজননকালীন সময়ের জন্য দু’টি ফিডিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। একটি রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ও অপরটি সুন্দরবনে। শুধু স্বাস্থ্যকর পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য শকুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না, মারাত্মক রোগজীবানুসহ দূষিত বস্তু খেয়ে মানব স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শকুন। প্রাকৃতিক ঝাড়ুদারকে টিকিয়ে রাখতে বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে। শকুনের খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। শকুনের আবাসস্থল, বাসা খুঁজে বের করে তা সংরক্ষণ করতে হবে। প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে পরিচিত প্রাণীটিকে বাঁচাতে সচেতনতা গড়ে তোলা প্রযোজন। শকুন বাঁচাতে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ২০১৬ সালে অসুস্থ ও আহত শকুনদের উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিনাজপুরের সিংড়ায় একটি শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ৯৩টি হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুন উদ্ধার, পরিচর্যার পর পুনরায় প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে। ২০১৭ ও ২০২০ সালে বাংলাদেশে ৭ম ও ৮ম আঞ্চলিক পরিচালনা কমিটির সভায় শকুন সংরক্ষণে বিভিন্ন কার্যকরী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার শকুন সংরক্ষণের জন্য একটি মাইলফলক। শকুন রক্ষায় বাংলাদেশের এই উদ্যোগ ভারত, পাকিস্তান ও নেপালে বেসরকারি পর্যায়ে অনুসরণ করা হচ্ছে। এছাড়া আফ্রিকার কয়েকটি দেশও বাংলাদেশের শকুন রক্ষার এই মডেল অনুসরণের কথা ভাবছে। সারাবিশ্বে শকুনকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে থাকে।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :

সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি:

এম এ কাশেম ( এম এ- ক্রিমিনোলজি).....01748159372

alternatetext

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো: তুহিন হোসেন (বি.এ অনার্স,এম.এ)...01729416527

alternatetext

বার্তা সম্পাদক: দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা

সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক :

মো: মিজানুর রহমান ... 01714904807

© All rights reserved © 2020-2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd