আবু বক্কার সিদ্দিক হিরা: যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশের মধ্য দিয়ে বিগত বছরগুলোর চেয়ে আরো আড়ম্বরপূর্ণভাবে ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩ হিজরি, ১৯ অক্টোবর ২০২১খ্রি. এবং ৩ কার্তিক ১৪২৮ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার দিবাগত রাত অর্থাৎ বাদ এশা হতে রাত দেড়টা পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন ঐতিহ্যবাহী নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (স.) এঁর জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা,মিলাদ শরীফ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নলতা শরীফে শায়িত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক, সাহিত্যিক, দার্শনিক, মুসলিম রেঁনেসার অগ্রদূত, সুফী-সাধক,পীরে কামেল সুলতানুল আউলিয়া কুতুবুল আকতার গওছে জামান আরেফ বিল্লাহ হজরত শাহ্ছুফী আলহাজ্জ খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) তার সময়ে অত্যন্ত নিজের প্রাণের অনুষ্ঠান মনে করে গুরুত্ব সহকারে পবিত্র ফাতেহা দোয়াজদহম অনুষ্ঠান পালন করতেন।
সে কারণে ‘স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টের সেবা’ পীর কেবলার রেখে যাওয়া এ মহান ব্রতকে সামনে রেখে তারই প্রতিষ্ঠিত নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি’র সভাপতিত্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য তথা মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠিত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রাখেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ আলহাজ্জ মাওলানা মোখলেছুর রহমান বাঙ্গালী (কুষ্টিয়া)।
আরে আলোচনা রাখেন নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদের খতিব, আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মো. আবু সাঈদ জিহাদী রংপরী, কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের আজীবন সদস্য আলহাজ্জ ড.আবু তৈয়ব আবু আহমদ, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ও সাবেক এন.বি.আর এর চেয়ারম্যান আলহাজ্জ ড. আব্দুল মজিদ, নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক সভাপতি আলহাজ্জ মোহাম্মদ সেলিমউল্লাহ ও খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইন্সটিটিউট এর মহাপরিচালক এ এফ এম এনামুল হক (ঢাকা)।
নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সহ-সভাপতি আলহাজ্জ মো. সাইদুর রহমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে পীর কেবলার লিখিত গুজারেশ পাঠ করেন খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইন্সটিটিউট এর পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম।
মুর্শিদি পেশ করেন মো.আনিসুর রহমান (নলতা শরীফ), না’তে রসুল পেশ করেন মো. রবিউল ইসলাম (নলতা শরীফ) এবং হামদ্ পেশ করেন মো. ফিরোজ আলম (মাঘরী আহ্ছানিয়া মিশন)। মিলাদ শরীফ পরিচালনা ও ফাতেহা পাঠ করেন নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন হাফেজী মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. হাবিবুর রহমান। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেন শানপুকুর জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মো. আব্দুল হাকিম।
পীর কেবলা রচিত গ্রন্থ থেকে অদ্য রাতের নামাজ (রোজা) সম্পর্কে আলোচনা রাখেন কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্জ আবুল ফজল শিক্ষক।
সভাপতি আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি’র বক্তব্যের পূর্বে তাওয়াল্লাদ শরীফ ও বাদ মাগরিব হতে এশা পর্যন্ত গজল পরিবেশন করেন শাহী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মৌলবী মো. খানজাহান আলী। কেয়াম পরিবেশন করেন মো.মাসুম বিল্লাহ।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার মিলাদ শরীফ, লক্ষ লক্ষ কলেমা শরীফ, অসংখ্য পবিত্র খতমে কুরআন, হাজার হাজার দোয়া দরুদ বকশিস করেন স্থানীয় সহ দেশ-বিদেশে অবস্থানরত পীর কেবলার বহু ভক্ত।
সবশেষে মহানবী (স.) এঁর জন্মের এই খুশির দিনে মহামারী করোনা ভাইরাস ও প্রাকৃতিক সহ সকল বিপদাপদ থেকে রক্ষা এবং মুসলিম উম্মাহ তথা বিশ্ববাসীর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন আলহাজ্জ মাওলানা মোখলেছুর রহমান বাঙ্গালী।
শাহী জামে মসজিদের ভিতরে তরতাজা ফুলের সু-শোভিত দৃশ্য এবং মসজিদ, পাক রওজা শরীফ, রাস্তা সহ আশ-পাশের এলাকায় আলোক সজ্জা, গেট তথা মনোরম ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত পবিত্র ফাতেহা দোয়াজদহম অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মো: এনামুল হক খোকন, পাক রওজা শরীফের খাদেম আলহাজ্জ মৌলবী আব্দুর রাজ্জাক, কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সহ-সম্পাদক আলহাজ্জ মো. মালেকুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ মো: আনোয়ারুল হক, নির্বাহী সদস্য আলহাজ্জ মোহাম্মদ ইউনুস, আলহাজ্জ রবিউল হক, শফিকুল আনোয়ার রঞ্জু, আলহাজ্জ মো. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, মো. আজিজুর রহমান, আলহাজ্জ একরামুল রেজা, আলহাজ্জ আলমগীর হোসেন, খায়রুল হাসান, আলহাজ্জ মো. আনারুল ইসলাম, শফিকুল হুদা সহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাবেক কর্মকর্তা আলহাজ্জ মো: আনিছুজ্জামান খোকন,আলহাজ্জ ডা: আকবর আলী, মো: আনছার আলী, আলহাজ্জ ডা: আবুল কাশেম, প্রভাষক ও সংবাদকর্মী মো. মনিরুজ্জামান মহসিন, সংবাদকর্মী মো: রফিকুল ইসলাম সহ মিশনের আজীবন ও সাধারণ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন শাখা মিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, পীর কেবলা আলহাজ্জ হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এঁর ভক্তবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ তথা নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের প্রায় ১৫ হাজার পুরুষ, মহিলা ও শিশু।
অনুষ্ঠানে দোয়া পরবর্তী প্রত্যেক মুসল্লীর মাঝে কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের পক্ষ থেকে রান্না প্যাকেট তাবারুক পরিবেশন করা হয়।
একইদিন ভোর সাড়ে ৩ টা থেকে নলতা পাক রওজা শরীফে পবিত্র কোরআন খতম, মিলাদ শরীফ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পবিত্র কোরআন খতম ব্যবস্থাপনায় ছিলেন হাফেজ মো: হাবিবুর রহমান এবং মোনাজাত পরিচালনায় ছিলেন আলহাজ্জ মাওলানা মো: আবু সাঈদ রংপুরী।
Leave a Reply